আমিঃতোর সাহস তো কম না?তুই আমার সাথে মজা করিস?
Jimin: আরে আরে কি করছো কি?
আমিঃনা তোরে হাত দিয়া মারমু না।আমি তোরে...
এই বলেই আশেপাশে খুজতে লাগলাম।তারপর ফুলদানি নিয়ে Jimin কে মারতে আসলাম।
আমিঃআজকে তোর মাথা আমি পাঠাইয়া ফেলমু।
Jimin আমার হাত গুলা ধরে বিছানায় ফেলে দিল তারপর আমার ওপর এসে বলল
Jimin: দেখি এবার কি করতে পারো।
আমিঃবাবা গো আমি গেলাম।হাতি ও মনে হয় তোমার থাইক্কা পাতলা আছে।
Jimin: কি বললা!!আমি হাতির থেকেও ভারি?!!!!
আমিঃতা নয় তো কি??
Jimin: দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।
এই বলেই আমার ঠোঁট জোড়া দখল করে নিল।
আমি ছুটার অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু Jimin এর সাথে পেরে উঠলাম না।
কিছুক্ষন পর আমাকে ছেড়ে দিল তারপর মুচকি হাসতে লাগলো।
আমিঃহাসো কোন দুখে??
Jimin: ভাবতাছি তোমার পুরা শরীরে যত শক্তি আছে তা আমার একহাতের শক্তির সমানও হবে না।
আমিঃথাকবে কি করে!!না আমি তোমার মতো লম্বা,না আমি তোমার মতো জীম করি আর না আমি তোমার মতো খাই।
এই বলে আমি মুখ ফুলিয়ে বসে পরলাম।
Jimin: ইশ এভাবে থেক না ময়নাপাখি আমি যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না।
আমিঃদেখ আমাকে এবার বল কেমনে কি হলো?
Jimin: আসলে আমি কালকে রাতে তুমি বের হয়ে যাওয়ার পরই তোমার ভাইয়াদেরকে কল দিয়ে তোমার আর আমার বিয়ের কথা বলি।কিন্তু তোমার ভাইয়ারা বলল তারা নাকি আমার দুইবোনকে পছন্দ করে আর তাদের বিয়ে করতে চায়।তারপর আমি কথাটা বাবা মাকে বললাম আর তারাও রাজি তারপর রুশা আর মেহেককে জিজ্ঞাসা করলাম তারা আপত্তি জানায়।তারপর বাবা ওদেরকে বুঝিয়ে আজকে নিয়ে আসে।
আমিঃএজন্যই এই অবস্থা!
Jimin: কিন্তু আমার মনে হয় না রুশা আর মেহেক এই বিয়ের জন্য রাজি হবে।রুশা রাজি হলেও মেহেক রাজি হবে কিনা বলতে পারছি না।
আমিঃসেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।
Jimin: না ভাবতে হলেই ভালো
অন্য দিকে
বড়ভাইয়ার রুমে
মেহেকঃআপনি আমাকে চিনেন মাত্র কয়েকদিন হইছে আর এর মধ্যেই আমার বাড়ীতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে দিয়েছেন।(রেগে)
বড়ভাইয়াঃদেখ আমি তোমাকে ভালোবাসি আর এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। তুমি আমাকে ভালোবাস কি না সেটা জেনে আমার কোন লাভ নাই।আর শুনো তুমি আমার রাগ সম্পর্কে জানো না।তাই আমাকে রাগিয়ো না।আর হা এটা ভেব না যে তুমি ভ্যাম্পায়ার বলে আমি তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারব না।মনে রেখ আমি কিন্তু অর্ধেক ভ্যাম্পায়ার।
মেহেক আমার ভাইয়া দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেলো কারন আমার ভাইয়ার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।মনে হচ্ছে ভাইয়ার চোখ থেকে আগুন বের হচ্ছে।
মেহেকঃআপনি অর্ধ ভ্যাম্পায়ার?? (অবাক হয়ে)তার মানে Y/N ও অর্ধ ভ্যাম্পায়ার।
এজন্যই আমি আর রুশা Y/N এর মনের কথা পড়তে পারতাম না!!!!!!আর একারনেই আমি আপনার মনের কথাও পড়তে পারি না!!
বড়ভাইয়াঃআমার মনের কথা জানার খুব শখ দেখছি!(বাকা হেসে)
মেহেকঃনা মানে.......
বড়ভাইয়াঃযাই হোক এখন তুমি নিচে গিয়ে বলবা যে তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি।
মেহেকঃকখনও না।
এই কথা বলতে দেরি ভাইয়ার থাপ্পড় দিতে দেরি হয় নি।
মেহেক গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর চোখের পানি ফেলছে।
বড়ভাইয়াঃআমার কথার অবাধ্য হয়ার সাহস হয় কি করে তোর।
মেহেকঃআ আপনি আমাকে মারলেন।এই আপনার ভালোবাসা???(কান্না করে)
মেহেকের কান্না দেখে ভাইয়া শান্ত হয়ে গেলো তারপর মেহেকের কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরল।
বড়ভাইয়াঃআমার কথার অবাধ্য না হলেই হয়।
মেহেকঃ.....................
বড়ভাইয়াঃতোমাকে যে আমার অত্যাচার সহ্য করতেই হবে মেহেক।তোমাকে অত্যাচার করার কোন ইচ্ছাই আমার ছিল না বরং আমি তো চেয়েছিলাম তোমাকে ভালবেসে আপন করে নিতে।কিন্তু তোমার ভাই তো তা হতে দিল না।আমার বোনকে অনেক অত্যাচার করেছে তোমার ভাই।আর আমার বোন আমার কলিজা তাই তো তোমার ভাইয়ের করা অপরাধের শাস্তি তোমাকে পেতে হবে।(মনে মনে)
বড়ভাইয়াঃএখন নিচে গিয়ে আমি যা বলছি তাই বলবা।যদি তা না হয়...........
মেহেক কিছু বলল না।
ছোটভাইয়ার রুমে
রুশা বসে আছে আর ভাইয়া তার সামনে চেয়ার নিয়ে বসে আছে।
রুশাঃকি আর বুঝি আমার সাথে ঝগড়া করতে মন চায় না?
ছোটভাইয়াঃকে বলেছে মন চায় না??
রুশাঃতাহলে আমাকে বিয়ে করছেন কেন?
ছোটভাইয়াঃযাতে তুমি আর আমি সারাজীবন একসাথে ঝগড়া করতে পারি।
রুশাঃকিইইইইইই!!!!!!!!!
ভাইয়া এবার হেসে দিল।
রুশাঃতার মানে আমরা বিয়ের পরও এভাবে ঝগড়া করবো???
ছোটভাইয়াঃতার মানে তুমি বিয়েতে রাজি??(বাকা হেসে)
রুশাঃনা মানে......
রুশা লজ্জা পেয়ে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিল।
ছোটভাইয়াঃইশ লজ্জা পেলে তোমাকে খুবই সুন্দর লাগে। মনে চায় খেয়ে ফেলতে।
রুশা এবার অবাক হয়ে তাকালো।
রুশাঃতার মানে আপনি মানুষও খান?
ছোটভাইয়াঃবোকা মেয়ে আমি তো কথার কথা বললাম।
রুশাঃও আচ্ছা।
ছোটভাইয়াঃআচ্ছা এবার চলো নিচে যাই আর বলি আমরা বিয়েতে রাজি।
রুশাঃহুম।
তারপর আমরা ছয়জনই একসাথে নিচে নামলাম।সবার মুখে হাসি থাকলেও মেহেকের মুখে হাসি ছিল না।আর এটা কেউ খেয়াল না করলেও আমি আর Jimin এর মা বাবা খেয়াল করেছে।
আমি বড়ভাইয়ার দিকে তাকাতেই ভাইয়া একটা হাসি দিল।
বড়ভাইয়া এবার ছোটভাইয়ার দিকে তাকালো।
বড়ভাইয়াঃআমি যদি এখন ছোটুকে Jimin এর টুকুর ওপর করা অত্যাচারের কথা বলি তাহলে ও রুশার জীবনটা ধ্বংস করে দিবে।তাই বেটার হবে না বলা।আমি মেহেককে আদর করবো আবার কস্টও আমি দিব।কিন্তু ছোটু জানতে পারলে রুশাকে সারাজীবন শুধু কস্টই দিয়ে যাবে।(মনে মনে)
আমরা সবাই এই বিয়েতে রাজি।তাই এক সপ্তাহ পর বিয়ের ডেট ঠিক করা হয়েছে......
সবাই খুশি হলেও আমাকে মেহেকের ব্যাপারটা ভাবাচ্ছে।
কি হয়েছিল বড়ভাইয়ার রুমে?
আমিঃআচ্ছা আমি বড়ভাইয়ার রুমে গেলেই তো জানতে পারবো।
(আমাদের তিনভাইবোন অর্ধ ভ্যাম্পায়ার বলে আমাদের অদৃশ্য হয়ার ক্ষমতা নাই।কিন্তু আমরা তিনজনই অতীত দেখতে পারি।আর এই অতীত দেখেই ভাইয়া ওইদিন আমার রুমে গিয়ে Jimin এর করা অত্যাচারের কথা জানতে পেরেছিল।)
আমি আর দেরি না করে ভাইয়ার রুমে গেলাম।ভাইয়ার রুমে গিয়ে দেখি বড়ভাইয়া রুমে নাই।
আমিঃভাইয়া আবার কই গেল?যাক আমার জন্য ভালই হলো। আমি গিয়ে ভাইয়ার বিছানায় বসে চোখ বন্ধ করে দেখার চেষ্টা করলাম।
আমি সব দেখে স্তব্ধ হয়ে রইলাম।আমার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো।
আমিঃভাইয়া মেহেককে মারলো কিন্তু কেন?আমাকে জানতেই হবে।
আমি এসব ভাবতে ভাবতেই ভাইয়া ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো।
বড়ভাইয়াঃকিরে টুকু তুই এখানে কোন দরকার ছিল??
আমিঃহুম ভাইয়া।কিছু জানার ছিল?
বড়ভাইয়াঃহুম বল।
আমিঃতুমি আজকে মেহেককে কেন থাপ্পড় মারলে।
আমার কথা শুনে ভাইয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।
বড়ভাইয়াঃতু তুই কি করে জানলি??
আমিঃসেটা পরের কথা আগে বল কেন মারলে?
বড়ভাইয়া কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে তারপর বলল
বড়ভাইয়াঃJimin এর জন্য আমি মেহেককে মেরেছিলাম।
আমিঃJimin এর জন্য???(অবাক হয়ে)
বড়ভাইয়াঃহুম Jimin এর জন্য। ওইদিন Jimin তোকে অনেক মেরেছিল।যা জানার পর আমার কলিজায় আঘাত লেগেছে।এজন্য আমি Jimin কে বুঝাতে চেয়েছিলাম যে বোনকে কস্ট দিলে ভাইয়ের কতটা কস্ট হয়।আর তাই আমি প্রতিশোধ নিতে মেহেককে মেরেছিলাম।
আমিঃভাইয়া তুমি কি পাগল হয়ে গেছ??
বড়ভাইয়াঃ..............
আমিঃতুমি কি মেহেককে ভালোবাস না??
বড়ভাইয়াঃখুব বেশি।
আমিঃতাহলে কস্ট কেন দাও?
বড়ভাইয়াঃতোকেও যে তার থেকে বেশি ভালোবাসি।
আমিঃভাইয়া Jimin আমাকে খুব ভালোবাসে তাই তো ও বিশাল আর ভাবিনের সাথে আমাকে সহ্য করতে না পেরে নিজেকেও মেরেছে আর আমাকেও।আসলে পাগল হলে যা হয় আরকি।আর আমি তো Jimin কে ক্ষমা করে দিয়েছি।
বড়ভাইয়াঃকিন্তু...........
আমিঃকোন কিন্তু না ভাইয়া আমি চাই তুমি মেহেককে আর কস্ট না দিয়ে ভালোবাসো।
বড়ভাইয়াঃতুই যা চাস তাই হবে।আমি আর মেহেককে কস্ট দিব না।
আমিঃহুম।আর হা তুমি কিন্তু মেহেককে সরি বলবে।
বড়ভাইয়াঃআচ্ছা বলবো।
আমি চলে আসলাম আমার রুমে।
বড়ভাইয়াঃকিন্তু কাহিনী হচ্ছে ওই মেয়ে যা পিচ্ছি স্বভাবের বিয়ের পরে কি হবে?এই মেয়ে আমার খেয়াল রাখবে না আমি ওর খেয়াল রাখব?হায় রে আমার কপাল শেষ পর্যন্ত আমি একটা পিচ্ছির প্রেমে পরলাম।
বলে আনমনেই হেসে দিল।
আমি আমার রুমে এসে দেখি Jimin এর কল এসেছে অনেকগুলা।
আমি কল ব্যাক করলাম।
আমি কল দিতেই ধরে ফেলল।
আমিঃহ্যালো
Jimin: কই ছিলা এতক্ষন?(গম্ভীর রাগি সুরে)
আমিঃআসলে ভাইয়ার সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম।
Jimin: ও আচ্ছা।
আমিঃতা কল দিয়েছ যে কোন জরুরি কথা ছিল নাকি??.
Jimin: একটু বারান্দায় আসো তো।
আমিঃএত রাতে বারান্দায় যাব তা ও আবার এই শীতের মধ্যে!!!!
Jimin: আসতে বলছি আসবা।এত কথা কিসের?
আমিঃআচ্ছা আসছি....
এই বলে আমি বারান্দায় গেলাম।
গিয়ে দেখি মহাশয় সাহেব দাঁড়িয়ে আছে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে।
একটা সাদা টি-শার্ট পরে আছে আর একটা টাউজার পরে আছে আর একটা জ্যাকেট পরে আছে।চুলগুলা এলো মেল।একদম সেই লাগছে।
আমরা দুইজন দুইজনের দিকে তাকিয়ে আছি
কিছুক্ষন পরে Jimin চলে গেলো।
অন্যদিকে
সামিয়া গান গাইতে গাইতে সিড়ি দিয়ে উঠছে আর বিশাল সিড়ি দিয়ে নামছে।
তারপর আর কি?ধাক্কা খেল দুইজনে।
সামিয়া পরে যেতে নিলে বিশাল সামিয়ার কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসল।
সামিয়াঃপরে গেলাম গো পরে গেলাম।আমার কোমর গেল গো।এখন আমার কি হবে গো।আমার বাচ্চাদের কি হবে?আমার নাতি নাত্নির মুখ দেখা আর হলো না।
বিশাল সামিয়ার কথা গুলা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।
তারপর ধমক দিয়ে বলল।
বিশালঃএই মেয়ে কি বলছো এসব?!!তুমি কি পাগল??তোমার কিচ্ছু হয় নি চোখ খুলে দেখো।
তারপর সামিয়া চোখ খুলে দেখলো সে পড়ে নি।
সামিয়া এবার দাড়ালো।
সামিয়াঃযাক বাবা বেচে গেলাম।আর হা thank you..
এই বলেই সামিয়া বিশালের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলেই বিশাল হাত ধরে টান দিয়ে দেয়ালের সাথে ধরলো।
বিশালঃআমার যে শুধু ধন্যবাদ চাই না।
সামিয়া ভয় পেয়ে গেলো।
সামিয়াঃকি কি কি চান?
বিশালের খুব হাসি পাচ্ছে সামিয়ার এইরকম ফেস দেখে।হাসি দমিয়ে রেখে বলল।
বিশালঃআমার যে........
সামিয়াঃকি...
বিশালঃআমার যে এখন.....
সামিয়াঃকি কি এখন.....
বিশালঃএক কাপ কফি চাই।
সামিয়া স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল।
সামিয়াঃআমি দিচ্ছি।
এই বলেই চলে গেল রান্না ঘরে।
আর বিশাল হাসতে হাসতে গিয়ে সোফায় বসে পরল।