ভাবিন সারাকে তার বাসায় পৌছে দিয়ে এলো।আমি আর বিশাল বাসায় পৌছে যার যার রুমে চলে গেলাম।
আজকে Jimin কে না দেখায় কেমন কেমন জানি লাগছে।কেমন জানি কস্ট হচ্ছে।
আমিঃএসব কি ভাবছি আমি?আমার কেন এমন হচ্ছে?আমি তো Jimin কে ঘৃনা করি তাহলে আমার এমন কেন লাগছে?আজকে Jimin কে দেখতে না পেয়ে আমার এমন কেন লাগছে??তাহলে কি আমি Jimin কে ভালবেসে ফেলেছি?না না না এ হতে পারে না।আমি কিছুতেই ওই বজ্জাতটাকে ভালোবাসতে পারি না।কিন্তু আমি কি করবো আমার তো কিছুই ভালো লাগতাছে না।আমি এখন কি করবো?
আমি কিছু একটা ভেবে বিশালের রুমে গেলাম।গিয়ে দেখি ভাবিনও আছে।আমি গিয়ে তাদের সামনে বসলাম।
বিশালঃকি হয়েছে জানু?
আমিঃচল না আমরা বাইরে হাটতে যাই।
ভাবিনঃএখন!!!!
আমিঃহুম কি হইছে?চল না প্লিজ
বিশালঃরাত ১২ টা বাজে তুই এখন বাইরে যাবি!
আমিঃপ্লিজ প্লিজ।
বিশালঃভাইয়ারা দিবে না।
আমিঃআমি ভাইয়াদের বলবো
ভাবিনঃআচ্ছা চল ভাইয়াদের থেকে পারমিশন নিয়ে আসি।
আমিঃহুম চল।
তারপর আমরা তিনজন বড়ভাইয়ার রুমে গেলাম।গিয়ে দেখি ছোটভাইয়াও আছে।
আমিঃভাইয়ায়ায়া।
বলেই দুইভাইয়াকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।
বড়ভাইয়াঃকি ব্যপার হুম।
ছোটভাইয়াঃনিশ্চয় কোন বায়না আছে।
বিশালঃভাইয়া চল না আমরা সবাই আজকে বাইরে হাটতে যাই.
বড়ভাইয়াঃএকদমি না।
আমিঃপ্লিজ প্লিজ প্লিজ।চল না প্লিজ
বিশালঃ প্লিজ ভাইয়া চল।
ভাবিনঃপ্লিজ ভাইয়া চল।
ছোটভাইয়াঃনো ওয়ে।
আমিঃপ্লিজ।।
বড়ভাইয়াঃআচ্ছা চল।
আমিঃইয়া হুউউউউউউউউউউ।(চিল্লিয়ে)
বিশালঃ আস্তে ভুটকি।
আমিঃকি বললি তুই?আমি ৫০ কেজি হইয়াও আমি ভুটকি??
ভাবিনঃশুন তুই যতই শুকনা হোস তবুও তুই আমাদের কাছে ভুটকিই থাকবি।
সবাই জোরে হেসে দিল।
আর আমি মুখ গোমরা করে বসে আছি।
বড়ভাইয়াঃআচ্ছা যা সবাই শীতের কাপর পরে আয়।বাইরে অনেক ঠান্ডা।
আমিঃওকে।
বিশাল আর ভাবিনঃআমরা যাচ্ছি তোমরাও পরে নাও।
ছোটভাইয়াঃআচ্ছা।
তারপর আমরা সবাই যার যার রুমে গিয়ে কাপর পরে এলাম।
আমি ছাই কালারের গেঞ্জি আর কালো কালারের লেগিংস পরেছিলাম আর একটা চাদর জড়িয়ে নিলাম।
আমার দুই ভাই সাদা কালারের গেঞ্জি আর কালো কালারের টাউজার পরেছে আর কালো কালারের জ্যাকেট গায়ে দিয়েছে।
বিশাল আর ভাবিনও কালো কালারের শার্ট কালো কালারের টাউজার আর ছাই কালারের জ্যাকেট পরেছে।
আমরা সবাই নিচে আসলাম।তারপর সবাই হাটতে বের হলাম।
আমিঃআহ রাতের শহরটা কি সুন্দর।
বড়ভাইয়াঃহুম।বাইরের এই ব্যস্ত শহর দিনের বেলা ভালো না লাগলেও রাতের বেলা খুবই সুন্দর লাগে।
ছোটভাইয়াঃহুম।মাঝে মাঝে রাতের বেলা হাটতে বের হওয়া উচিত।
আমিঃএখন তো বলবাই।প্রথমে তো আসতেই চাইছিলা না।
বিশালঃচল আমরা গিয়ে সামনের দোকানে চা খাই।
ভাবিনঃহুম চল।
আমিঃচল চল।শীতের রাতে চা খাওয়ার মজাই আলাদা।
আমার লাফানি দেখে সবাই হেসে দিলো।
আমিঃহাসি থামিয়ে প্লিজ চল।
বড়ভাইয়াঃআস্তে টুকু পরে যাবি।আস্তে দৌড় দে।
আমি কোন কথা না বলে দৌড়ে গিয়ে দোকানে ঢুকলাম।আমার পরে ভাইয়ারাও ঢুকলো।
দোকানে ডুকে আমি অবাক।
আমি অস্ফুট স্বরে বলে উঠলাম।
আমিঃJimin।
আমি এসে দেখি Jimin আর রুশা বসে আছে।
বড়ভাইয়াঃআরে রুশা তুমি এখানে?
ছোটভাইয়াঃতুমি এতো রাতে এখানে কেন?(ভ্রু কুচকে রাগি কন্ঠে)
রুশাঃআমি আমার ভাইয়ার সাথে এসেছি।
তা Y/N তোরা এখানে?
আমি Jimin এর দিক থেকে চোখ সরিয়ে রুশার দিকে তাকালাম।
আমি কিছু বলার আগেই বিশাল বলল
বিশালঃআসলে জানুর খুব চা খেতে ইচ্ছা করছিলো তাই তার ইচ্ছা পুরন করার জন্য আমরা সবাই মিলে চা খেতে এলাম।
রুশাঃও আচ্ছা।
বিশালের মুখে জানু ডাক শুনে Jimin এর ভ্রু কুচকে গেলো।কিন্তু আমার দিকে তাকালো না।
আমি Jimin এর দিকে তাকিয়ে আছি।কিন্তু Jimin একবারের জন্যও আমার দিকে তাকালো না।আমার খুবই কস্ট লাগলো।
বড়ভাইয়াঃতা রুশা তোমার ভাই কই?
রুশাঃএই তো এটাই আমার ভাই Park Jimin ।
বড়ভাইয়া কিছুক্ষন Jimin এর দিকে এক দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে।তারপর চোখ সরিয়ে Jimin এর সাথে হাত মিলালো
বড়ভাইয়াঃআমি Kim Namjoon (হাত মিলিয়ে)
Jimin একটা মুচকি হাসি দিল। তারপর ছোটভাইয়ার সাথে হাত মিলালো।
ছোটভাইয়াঃআমি Kim Seokjin ।
Jimin: আর ওরা দুইজন?(বিশাল আর ভাবিনের দিকে ইশারা করে).
আমি অবাক হলাম।Jimin এদের জন্যই আমার সাথে এমন ব্যবহার করলো আবার তাদেরই নাকি চিনে না।বজ্জাত লোক।
বড়ভাইয়াঃও ওরা হচ্ছে টুকুর সরি Y/N এর বেস্ট ফ্রেন্ড।
ছোটভাইয়াঃবলতে গেলে আমাদের ভাইয়ের মতই।
Jimin: ও আচ্ছা।আচ্ছা আমাদের চা খাওয়া শেষ তাহলে আমরা উঠি।ভালো থাকবেন।
চল রুশা।
এই বলে Jimin বের হয়ে গেলো। একবারের জন্যও আমার দিকে তাকালো না।
রুশাঃআসি রে Y/Nee।
আমিঃহুম।
এই বলে রুশা যাওয়ার সময় ছোটভাইয়ার দিকে একবার তাকালো।ভাইয়াও তাকালো।আর তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিল।এটা দেখে রুশা ভ্রু কুচকে একটা লুক দিয়ে চলে গেলো।
আমি মন খারাপ করে বসে আছি।আমার খুব কস্ট লাগলো।
বিশালঃমামা ৫ কাপ মালাই চা দাও।চিনি বেশি করে দাও।
চা মামাঃআইচ্ছা মামা।তা মামা আপনারা কি নতুন আগে যে দেখলাম না এইদিকে।
ভাবিনঃনা আমরা এই কয়েকমাস হলো লন্ডন থেকে আসলাম।
চা মামাঃও আইচ্ছা।
আমি এবার মামার দিকে তাকালাম।
আমিঃআচ্ছা মামা তোমার বাড়িতে কে কে আছে?
চা মামাঃএকটা মাইয়া আছে আর কেউ নাই।
বড়ভাইয়াঃআর কেউ নেই তোমার?
চা মামাঃনা আব্বা আমার মাইয়াডা ছাড়া আর কেউ নাই।
বিশালঃআপনার মেয়েটাকে কি একা রেখে এসেছেন?
চা মামাঃনা আব্বা ও এতক্ষন এখানেই আছিলো।এহন আমার লাইগা খাবার আনতে গেছে।
ছোটভাইয়াঃও আচ্ছা।তা কিসে পড়ে তোমার মেয়ে?
চা মামাঃএইবার এইচএসসি পরীক্ষা দিব।
আমিঃ ও আচ্ছা।
তারপর আমরা চা খেয়ে মামার সাথে আরও কিছুক্ষন কথা বলে চলে আসলাম।
রুমে এসে আমি আমার বিছানায় একটা চিরকুট দেখতে পেলাম।আমি হাতে নিয়ে খুলে পড়তে লাগলাম।
"তোমার সাহস তো দেখি দিন দিন বেড়েই চলেছে।তুমি কোন সাহসে গেঞ্জি আর লেগিংস পড়ে বের হয়েছিলে।থাপ্পড় খেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর যদি কোনদিনও দেখি তাহলে তোমার খবর হয়ে যাবে বলে দিলাম"
চিরকুটটা পড়ে আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা কার কাজ।আমার রাগ হলেও একটা ভালো লাগা শুরু হলো। তার মানে কি আমি Jimin কে ভালবেসে ফেললাম।তাহলে সত্যিই কি Y/N একটা এলিয়েনের প্রেমে পরে গেলাম।
এসব ভাবতে ভাবতে আমি ঘুমিয়ে পরলাম।
ঘুমের মধ্যে আমার মনে হচ্ছে কেউ আমাকে খুব গভীরভাবে দেখছে।আমি চোখ খুলে ফেললাম। দেখলাম কেউ নেই।আমি উঠে গিয়ে বারান্দায় গেলাম।না কেউ নেই।আমার মন খারাপ হয়ে গেলো।আমি ভেবেছিলাম Jimin এসেছে।
আমিঃওই এলিয়েন টা আজকেও আসলো না।(মন খারাপ করে)
এই বলে আমি বিছানায় এসে আবার ঘুমিয়ে পরলাম।
আমার এই অবস্থা দেখে Jimin হাসতে হাসতে শেষ।
Jimin: পরেছে পরেছে ভ্যাম্পায়ার কিং এর রানি তার রাজার প্রেমে পরেছে।
বলেই আবার হাসতে লাগলো।
তারপর Jimin চলে গেলো।
সকালে..
আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে নামাজ পরে নিলাম। তারপর আমি কিছুক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি যে আজকে রুশার সাথে সরাসরি কথা বলতে হবে।ওরা যদি মানুষ না হয় তাহলে ওরা কি।
এলিয়েন তো মানুষের মত দেখতে হয় না।তাহলে ওরা কি?না আমাকে আজকেই সব জনাতে হবে।
তারপর আমি রুমে এসে বসলাম।দেখলাম রুশার কল আসলো।আমি ধরলাম।
আমিঃহ্যালো।
রুশাঃকি রে কেমন আছিস?
আমিঃভালো তুই?
রুশাঃআমিও ভালো আছি।শোন আজকে একটু তারাতারি চলে আছিস।
আমিঃকেন?
রুশাঃকয়েকদিন পর ভার্সিটির ১০০ বছর উপলক্ষে খুব বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।ওইটার জন্যই তারাতারি আসতে হবে।
আমিঃও আচ্ছা।আচ্ছা আমি চলে আসবো।
রুশাঃআর জানিস প্রধান অতিথি কারা??
আমিঃআমি জানবো কি করে?
রুশাঃতোর ভাইয়ারা.
আমিঃ কিইইইইইই
রুশাঃহুম।
আমিঃতুই কেমনে জানলি?
রুশাঃআব্বু বলছে।
আমিঃও আচ্ছা।
রুশাঃআচ্ছা বাই।আমি রেডি হব।
আমিঃহুম বাই।
কল কেটে আমি রেডি হতে লাগলাম।
আজকে আমি কালো কালারের লং থ্রিপিস পরলাম।হাতে একটা কালো কালারের ঘড়ি,চুলগুলা মাঝখান দিয়ে সিতা করে নিচের দিকে কার্ল করে ছেড়ে দিলাম। ওরনাটা একপাশে ছেড়ে দিলাম আরেকপাশে কিছু চুল এনে সামনে রাখলাম।চোখে কাজল দিলাম আর হালকা লিপস্টিক দিলাম।
আমি রেডি হয়ে নিচে গেলাম।দেখি সবাই টেবিলে বসে আছে।আমার দিকে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।আমি গিয়ে আমার চেয়ারে বসে পরলাম।
আমিঃকি হল এভাবে হা করে তাকিয়ে আছ কেন সবাই?
বড়ভাইয়াঃদেখছি যে আমার টুকুকে আজকে কতো সুন্দর লাগছে।
ছোটভাইয়াঃতোকে খুবই মিস্টি লাগছে মিস্টি।
আমিঃআমি যে সুন্দরী সেটা আমি জানি।
বিশালঃ হইছে থাম এবার।
ভাবিনঃতারাতারি নাস্তা করে বের হ।
আমিঃহুম।
তারপর আমরা সবাই নাস্তা করতে লাগলাম।
আমিঃবড়ভাইয়া তোমাদের নাকি আমাদের ভার্সিটির ১০০ বছর উপলক্ষে যে অনুষ্টান হবে ওইটাতে প্রধান অতিথি করা হবে