FF Name - Revenge of love - Part - 3 | Taehyung Bangla FF

 


Ji...jimin ভাই আসছে?
কই আমিতো তাকে দেখলামনা?
ভাবি : গাড়ি পার্কিং করে আসতে আসতে লেট হয়ছিলো তো তাই মনে হয় দেখিসনি।
আমি :আচ্ছা...ভাবি...
বলতে বলতেই eunjoon এসে সবাইকে নীচে আসতে বললো লান্চের জন্যে।।
তো সবাই একসাথে নীচে নামচি আর ভাবি বলতে লাগলো ফিসফিস করে,"
Y/n...এই y/n.."
আমি : কি?
ভাবি : কি কি করছিলি বলনা?
আমি : ভাবি কি করেছি মানে?আর কি বলছো তুমি এসব বুঝিনা তো।
ভাবি : মানে গতকাল রাতে...মানে বাসর রাতে আর কি?(মুখ টিপে টিপে হাসছে আর বলছে।)
আমি : ছিঃ ভাবি এসব কি বলছো লজ্জা করেনা তোমার?কেউ শুনবে তো?
ভাবি : কেউ শুনবেনা। তাইতো ফিসফিস করে বলছি আর তুই ও আমায় ফিসফিস করে সব বলে দে হা হা হা।
আমি : (মনে মনে) দাঁত চল্লিশটা দেখায় হাসতেছে আবার লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে বলে কিনা কি করছিলি।হুহ, কি বেহায়া মেয়ে।
ভাবি হঠাৎ ধাক্কা মেরে বললো," কিরে কি করলি বলনা?"
আমি : আচ্ছা পরে বলি।আগে লান্চ করেনি।
কারণ আমার তখন খুব ক্ষিধা লাগছে।
টেবিলে সব রকমের খাবার সাজানো,
পোলাও,ফ্রাইড চিকেন,চিংড়ির মালাইকারি,বিফ কালো ভুনা ইত্যাদি ইত্যাদি।
এসব খাবার দেখে আমার তো সব গপাগপ খেয়ে নিতে ইচ্ছে করছিলো।
কিন্তু এমন ভাবে খেলে তো সবাই রাক্ষস বলবে।উফফফ আর পারছিনা ক্ষুধার জ্বালা সইতে।তাই ভাবিকে ধাক্কাতে লাগলাম যেনো খাওয়ার সময় টেবিলে আমাকেও বসতে বলে।
ওমা নীচে এসে এতক্ষণে jimin কে দেখলাম।ওতো আমার দিকে থাকিয়ে আছে হা করে।যেনো এখনি মশা ঢুকে যাবে। আর আমি রাগান্বিত ভাবে থাকিয়ে আছি।আর এর পিছনে একটা ঘটনা আছে সেটা আমি পরে বলছি।
যাক সবাইকে টেবিলে বসানো হলো।আর ঐ যে ওনি আমার রাবিশ প্লাস খরুচ বরটাকে ও বসানো হলো।তাকে অন্যপাশে বসিয়েছিলো কিন্তু আমার শয়তান প্লাস বেহায়া ভাবিটা Taehyung কে টেনে এনে জোর করে আমার পাশেই বসালো।আর আমার অন্য পাশে ভাবি বসলো।
তারপর মেহমানদারি শুরু হলো....
আমিও খাচ্ছি খুব ভালো করেই কারণ পুরো টেবিল ঝুড়ে শুধু আমার বাড়িরই মেহমান তাই নিঃসংকোচে খাওয়ার খাচ্ছিলাম।হঠাৎ পাশ থেকে ভাবি ধাক্কা দিয়ে বলল,
ভাবি : আরে আস্তে খা আর কম খা সবাই দেখে আছে তোর দিকে আর সবাই তোকে রাক্ষস বলবে।
আমি : ভাবি... রাগি লুক নিয়ে।
তারপর আমার ঐ যে ওনি, মানে রাবিশ খরুচ বরটা সবার প্লেটে তরকারি দিচ্ছিলো,আমার পাশে ভাবি তাই ভাবিকেও নিয়ে দিচ্ছে কিন্তু শয়তানটা আমায় দিচ্ছে না আমার দিকে একটু থাকাচ্ছে ও না আর কিছু লাগবে কিনা একবারো জিঙ্গেস পর্যন্ত করলনা। তাই আমি মুখটা বাংলার পাচের মতো করে রাখলাম আর তখনই আমার এই বেহায়া ভাবি সরি লক্ষি ভাবিটা Taehyung কে বললো,
ভাবি : ভাইয়া, চিংড়ির মালাইটা এদিকে পাস করো তো।
কিন্তু সে চিংড়ির বাটিটা পাস না করে ভাবির প্লেটে কয়েকটা চিংড়ি দিলো।
ভাবিকে দিয়েই যে বসতে যাবে অমনি ভাবি বললো," y/nকেও দাও,ওর খুব পছন্দ চিংড়ি।"
আমি তো খুশিতে শেষ,
ইচ্ছা করছিলো ভাবিকে একটা চুম্মা দিয়ে ফেলি কিন্তু না এমন করলে সবাই কি ভাববে তাই দিলাম না।
ওমা,দেখি রাবিশ খরুচ বরটা এবার আমার দিকে একটু থাকালো আর ছয় সাতটা চিংড়ি দিয়ে আমার প্লেটটা ভর্তি করে দিলো।তারপর চেয়ারে বসে এগেইন খাওয়া শুরু করলো।
আমার কি যে খুশি লাগছিলো আরে কি ভাবছেন আপনারা হুমমম,,,,
বরটার জন্যে না তার রাগি লুকটার জন্যে।
কাউকে রাগাতে পারলে আমার বেশি ভালো লাগে।আর কেউ যদি আমায় বলে যে,
এই y/n আমার সাথে এমন আর দ্বিতীয় বার করবানা। এটা আমার পছন্দ না এবং এটা আমার একদম সহ্য হয়না, তখন আমি সেই কাজটাই করে বারবার তাকে বিরক্ত করি আর সেটা বেশি বেশি করি যাতে সে আরো বেশি রাগান্বিত হয়।বেশি রাগলেই তো আসল মজা তাইনা।
খাওয়ার মাঝে হঠাৎ দেখি আমার শ্রদ্ধেয় jimin ভাই আমারি দিকে এতোক্ষন তাকিয়ে ছিলো আর দাঁত চল্লিশটা দেখিয়ে একটু মুচকি হাসছিলো।
দেখে আমার মাথার মেজাজ টাই খারাপ হয়ে গেলো
জানোয়ার একটা।তারাতারি খেয়ে ভাবিকে বললাম," আমার খাওয়া শেষ আমি রুমে গেলাম তুমি খাওয়া শেষ করে রুমে আসো।"
এই বলে রুমেই চলে গেলাম।কিন্তু ঐ যে ওনি আমার দিকে একটাবার ও তাকালো না।রাক্ষসের মতো গপগপ গপ গপ খেয়েই যাচ্ছে মনে হয় জিবনে খাওয়ার খাইনি।হুহ,যত্তসব
রুমে গিয়ে ফ্যানটা ফুল স্পিডে ছেড়ে মোবাইল হাতে নিয়ে গান রেকোর্ডিং করতে লাগলাম।আর ফ্যান অন করেছি এই কারণে যাতে গান রেকোর্ড করার সময় যাতে বাইরে কেউ শুনতে না পায়।আর মোবাইলে সব রকমের গান রেকোর্ড করে পরে সেই গান শুনে হাসা আমার ছোটবেলার অভ্যেস।
তাই গান গাওয়া শুরু করলাম......
হঠাৎ কটকট করে দরজাটা কে যেনো খুললো আর আমার গানটাও সাথে সাথে অফ
আহা জানিনা কে না কে শুনলো।
সব দ্বিধা কাটিয়ে দেখি ভাবি,
ওরে বাবা বড় বাছা বেচে গেছি।
রাবিশ খরুচটা হয়লে তো কি লজ্জা পেতাম।
ভাবি এসেই বললো," এখনো এসব যায়নি?"
আমি : কি যে বলোনা তুমি ভাবি।
ছোটবেলার অভ্যেস কিভাবে এতো তারাতারি যাবে বলো।
ভাবি : হুম তাও তো ঠিক।
আমি বসা থেকে যেই উঠতে যাবো অমনি ভাবি খপাস করে ধরে বললো,"আরে বস কই যাস? অনেক জুরুরি কথা আছে তোদের সাথে।"
আমি : আরে আমি ওয়াসরুমে যাচ্ছি।আর তোদের সাথে মানে?
ভাবি : তোদের সাথে মানে হচ্ছে যে তোর সাথে আর তোর taehyung এর সাথে।ওকে ডেকেছি তো খেয়ে আসবে বলেছে।তাই বস এখানে।আর নে ধর তোর জিনিস গুলা।চকলেট আর ডায়রী।আমি সেগুলা আলমারিতে রাখতেই যাচ্ছি এমন সময় ঐ যে ওনি আমার রাবিশ খরুচ বরটা আসলো।
আর তখনি ভাবি আমার হাত ধরে টান মেরে আবার খাটে বসিয়ে Taehyung কে সোফায় বসতে ইশারা করলো।
আর আমি হাত থেকে ডায়রী আর চকলেটের বক্সটা খাটের পাশের ড্রয়ারের উপরে রেখে দিলাম।আর Taehyung ও বসে পরলো সোফায়।
আর ভাবি কথা শুরু করলো...
ভাবি : আচ্ছা ভাইয়া শুনো,y/n এখনো ছোট মানুষ অনেক কিছুই বুঝেনা। তাই একটু রাগ অভিমান করবেই।তা তোমার বুঝতে হবে।
Taehyung : (আমার দিকে থাকিয়ে) হুম।
আর আমি নীচের দিকে তাকিয়ে আছি।
ভাবি : আর শুনো yn তোমার সব কথা শুনবে তুমি যেমন বলবে ঠিক তেমন।কোনো বেয়াদপি করবেনা।আমি ওকে বলে দিবো।
Taehyung চুপ করে আছে।
আর আমি মনে মনে রাগ।ছি এসব কি বলছে ভাবি....না জানি আর কি কি বলে।
তাই ভাবিকে বললাম," ভাবি তুমি চা খাবে?"
ভাবি : চুপ কর তুই।আমার কথা এখনো শেষ হয়নি।আর Taehyung শুনো,
আরেকটা কথা বলি কিছু মনে করোনা। আর সেটা তোমাদের একান্ত প্রাইভেট বিষয়ক কথা আর সেটা হচ্ছে,yn এখনো ছোট মানুষ তাই এতো তারাতারি বেবি নেওয়াটা আমার ঠিক মনে হচ্ছে না।কারণ ও সামলাতে পারবে না।একটু ভেবে দেখবে।
Taehyung চুপ।
তবে এক পলক আমার দিকে তাকিয়ে আবার ভাবির দিকে তাকিয়ে বললো," আচ্ছা ভাবি আমি একটু নীচে দেখে আসছি।"
আর আমিতো লজ্জায় মরে যাচ্ছি।ইচ্ছে করছিলো ফ্লোরটা ফাক করে মাঠির নীচে ঢুকে যায়।
যখন ও রুম থেকে বের হয়ে চলে গেলো যেনো আমি একটু বাচলাম আর তখনি রাগি লুক নিয়ে ঐ ঐ বেহায়া নির্লজ্জ ভাবির দিকে চেয়ে বললাম,
আমি : ভাবি ছিঃ তুমি এসব কি কথা বললে ওকে।এসব বলার কি দরকার ছিলো।তোমার কি একটুও লজ্জা শরম নাই।
ভাবি : (হেসে হেসে) আরে এতে আবার লজ্জা কিসের।যদি তোরা কিছু করে বসিস তখন কে সব সামলাবে, হুহ ?
তাই এই নে ধর এগুলা রাখ রাতে কাজে আসবে।
আমার হাতে একটা ছোট পেকেট দিলো।
আমি পেকেটটা খুলে অবাক,
তারাতারি গিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিলাম আর বললাম, "ছি ছি এসব কি।ও দেখলে কি ভাববে?"
কিন্তু পেকেটটা যে ডাস্টবিনে ফেললাম তা ভাবিকে বুঝতে দিইনি।
আর ভাবি,,, আমি নীচে গেলাম তারপর সবাই একটু বসে গল্প করলাম।আমার রাবিশ খরুচ বরটা আমার অপজিট সোফায় বসে গল্প করছে সবার সাথে কিন্তু আমার দিকে একটুও তাকাচ্ছে না।
আর আমিতো লজ্জায় থাকাতে পারছি না।কিন্তু এর ফাকে ফাকে ভাবি আমাকে ওর দিকে একবার আর রুমের দিকে একবার ইশারা করে কিছু বলছে,যা আমি সবার আড়ালে খুব ইজিতেই বুঝতে পারছি।আর ভাবিকে মনে মনে গালি দিচ্ছি।বেহায়া একটা।
এর আরো কিছুক্ষণ পর সবাইকে চা নাস্তা দিলো।সবাই খেয়ে যাবার জন্যে প্রস্তুতি নিলো।আর সবার আড়ালে ভাবি আমাকে আর Taehyung কে আবার এনে Taehyung এর হাতে আমার হাত তুলে দিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বললো,
ভাবি : আমার ননদকে তোমার হাতে তুলে দিলাম।তাকে কখনো কষ্ট দিওনা।আর তাকে সবসময় আগলে রেখো ভালোবেসো।
একথা বলে ভাবি আমায় জড়িয়ে ধরলো আর কাদতে লাগলো আর আমিও আমার হাতটা Taehyung হাত থেকে নিয়ে ভাবিকে জড়িয়ে ধরলাম আর দুুফোটা চোখের পানিও ঝড়ালাম।আর এদিকে আমার শাশুড়ি মা এসে বলছে,
শাশুড়ি মা : হয়েছে হয়েছে আর কাদতে হবে না।এখানে তোমার সবাই আছে।
ওদের যেতে দাও এখন।এভাবে কাদলে ওরা বোনকে রেখে কিভাবে যাবে?
সবাই আমাদের দিকে আসলো আর ভাইয়ারাও আমাকে একটু সামান্য জড়িয়ে ধরে বিদায় জানিয়ে চলে গেলো।
আর আমিও রুমে চলে গেলাম।আর রুমে গিয়ে দেখি রাবিশ খরুচটা আলমারি থেকে কাপড় নিয়ে পরছে,
ব্লাক টিশার্ট,সাথে ব্লাক কোটি আর ব্লাক জিন্স।
দেখতে খুব ফাটাফাটি লাগছে।
আর আমার মনে কিসব আজে বাজে প্রশ্ন উদয় হচ্ছে কোথায় যাচ্ছে সাহেব এতো টিপটপ হয়ে।
থাক আমার এতো মাথা ঘামানোর দরকার নাই যেখানে খুশি সেখানে যাক তাতে আমার কি।হুহ যত্তসব, সে আামর দিকে এক নজর দেখে আবার মোবাইলটা হাতে নিয়ে চলে গেলো।
তাকালো তো এক নজর বুঝলম তাও আবার ঐ একই রাগি লুক নিয়ে।এই বাড়িতে আসার পর থেকে এই রাবিশ খরুচটার মুখে একবারো হাসিঁ দেখলাম না। কিন্তু কেনো?????
নাকি সে এমনি ধেৎ ,কি আজাইরা সব চিন্তা করতেছি।সে যেমনি হোক না কেনো তাতে আমার কি।
এমনি এমনি করে রাত দশটা বেজেই গেলো।আর আমি এতক্ষণে গান শুনছিলাম।কখন যে এতো টাইম হয়ে গেলো খেয়ালি করিনি।
যাই হোক অবশেষে দরজায় কারো নক করার আওয়াজ পেলাম।দরজা খুলে দেখি eunjoon। (মনে মনে) হুহ এতক্ষণে আমার কথা মনে পরলো বুঝি?
Eunjoon : ভাবি এতোক্ষণ কি করছিলে?
আমি : (মনে মনে) হুহ,এতোক্ষণ ভাবির কথা মনে ছিলোনা। আর এখন আসছে ঢং দেখাইতে।
নাহ,তেমন কিছুনা।
Eunjoon : আচ্ছা ভাবি চলো ডিনারে।সবাই টেবিলে খেতে বসে গেছে।জলদি চলো।
আমি : আসলো আমার না খেতে ইচ্ছে করছে না।
সামিহা : কেনো?
আমি :ওমমম....মানে..মা
Eunjoon আমাকে থামিয়ে দিয়ে," ওহ আচ্ছা বুঝেছি,কেনো খেতে চাওনা।ভাইয়া তার বেস্টফেন্ডের ঐখানে দাওয়াতে গেছে।ডিনার সেরেই আসবে।
আর তুমি চলো তো খেতে।"
আমি : আরে না eunjoon। আমি তো ব্যাস এমনিতেই বলছিলাম।
Eunjoon তারপর ও আমার কোনো কথা না শুনে আমার হাত ধরে টানতে টানতে নীচে নিয়ে গেলো।আর আমিও ডিনার টা একসাথে সেরে নিলাম।
আর যখনি উঠতে যাবো ঠিক তখনি আমার
শুশুর বাবা বললো,
শুশুর বাবা : শুনো মা,তোমার কি এখানে কোনো অসুবিধে হচ্ছে?বা আমাদের সাথে লান্চ ও ডিনার করতে কি লজ্জা করছে?
আর লজ্জা পাওয়ারি বা কি আছে আমারা সবাই তো এখন তোমার আপনজন।তাই কোন সমস্যা হলে আমায় বা তোমার মাকে বলো।আর খেতে অসুবিধে হলে সামিহাকে বলো রুমে খাওয়ার দিয়ে আসতে।
আমি : না আংকেল। আমার কোনো সমস্যা নাই।আর হলে আপনাদের বলবো।
হঠাৎ বাবাকে আংকেল বলাতে Eunjoon আর মা হেসে দিলো।আর আমি জিব্বায় কামড় দিয়ে সরি বললাম।
শুশুর বাবা : আংকেল বলবে না বলবে বাবা।বুঝলা মা।
আমি : হুম।
শুশুর বাবা : নাকি বাবা ডাকতেও লজ্জা করবে? একটু দুষ্টুমি হেসে আমার দিকে একবার মায়ের দিকে থাকিয়ে।
আমি : না বাবা।হা বাবা।না না না..বাবা ঠিকাছে।
সবাই একসাথে হাসছে।
খাওয়া দাওয়া শেষে রুমে গেলাম।রাবিশ খরুচটা এখনো আসেনি।প্রায় রাত ১১টা ৪৫ মিনিট হতে চললো আর আমি অপেক্ষা না করেই ফ্রেশ হয়েই শুয়ে পড়লাম।ভাবলাম হয়তো আসবে না।
আর গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
চোখ খুলেই দেখি আমার চারোপাশে আলো মানে সকাল হয়ে গেছে বুঝতে পারলাম।শুয়া থেকে উঠতে উঠতে হা করে হাই তুলে যেই না বসলাম সামনে দেখে আমি তো পুরাই 'হা'
একি আমার সামনে যে ঐ যে ওনি মানে আমার রাবিশ খরুচ বরটা সোফায় বসে পেপার পড়ছে।
আর আমি মুখটা তারাতারি বন্ধ করে কাপড় ঠিক করতে লাগলাম।কারণ আমি যে মরার মতো ঘুমিয়ে থাকি যদি আমার সামনে সিডর বা ঘূর্ণি ঝড় ও হয়না তাহলে আমার বিন্দুমাত্র খবর থাকে না।
আর বিয়ের আগে তো আমাকে ঘুম থেকে উঠানোর জন্যে আম্মু,আব্বু,ভাই,বোন মানে আমার বাসার সবাই ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত হয়ে যেতো কিন্তু আর আম্মু তো মাঝে মাঝে রাগ করে গায়ে পানি ঢেলে দিতো আর কোনোসময় লম্বা বেত দিয়ে কয়েকটা মাইরও দিয়ে দিতো কিন্তু এতেও কোনো কাজ হতো না।
অনেক সময় তো ইচ্ছা করেও উঠতাম না।উঠেও না উঠার ভান করে দেখতাম কে কি পরীক্ষা কাজে লাগাচ্ছে।
এই সুযোগটাই আমার ছোট বোন বেশি নিতো,আর আমাকে কয়েকটা তাপ্পর আর ঘুসি লাগায় দিতো।আর আমি ঘুম থেকে উঠে সব উসুল করে নিতাম।
কাপড় সব দিকে ঠিক আছে কিনা দেখে নিলাম।আল্লাহই জানে আমি কি অবস্হায় ছিলাম।তারপর আমি খাট থেকে উঠে মুখটাকে এমন ভাব করলাম যেনো কিছুই হয়নি.।
ফ্রেস হয়ে রুমে এসে একটু হালকা সাজগোজ করে নিলাম।
মোবাইলটা যখনি হাতে নিলাম তখনই eunjoon এর ডাক শুনতে পেলাম," ভাবি ব্রেকফাস্ট রেডি জলদি আসো।"
আমার আগে আগে ঐ রাবিশ খরুচটাই চলে গেলো আর আমি তার পিছে পিছে গেলাম। তারপর ব্রেকফাস্ট সেরে আবার রুমে আসলাম।
আর আমার ওনি আবার বাইরে চলে গেলো ফিটফাট হয়ে।
আর ওনি রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে eunjoon হুট করে রুমে চলে আসলো।
আর আমাকে বললো,
Eunjoon : ভাবি,ভাইয়া তো আজও তার ফ্রেন্ডসদের সাথে ঘুরতে চলে গেলো আর আসবে একেবারে রাতে ডিনার সেরে।
তুমিতো আবার একা হয়ে গেলে।হুমমম
কি হবে এখন? (দুষ্টুমির হাসি দিয়ে)
আমি: আরে Eunjoon, তোমার ভাইয়া গেছে তো কি হয়ছে তার কিউট বোনটাতো আমার জন্যেই রেখে গেছে তাইনা?
Eunjoon: হুম ভাবি।তবে আর বেশিদিন আমায় পাবে না।মন খারাপ করে।
আমি: কেনো?
Eunjoon: কারণ,আমি তোমার বৌভাতের কিছুদিন পরেই নানুর বাসায় চলে যাবো।কলেজ ছুটি শেষ তাই।
আমি : তুমি নানু বাসা থেকে পড়ো?
আর কোন ইয়ারে?
Eunjoon : সেটা তো তোমাকে বলাই হলো না।আমি ইন্টার ফাস্ট আর নানুবাসা থেকে কলেজ খুব কাছে তাই বাবা ঐখানেই পাঠায় দিছে। আচ্ছা চলো তোমাকে আমাদের ছাদটা দেখিয়ে আসি।
আমি : হুম চলো......
ছাদে গিয়ে রিতিমতো আমি অবাক,
এটা কি ছাদ নাকি গার্ডেন?
কি সুন্দর করে বিভিন্ন সব ফুলের গাছ লাগানো।আর সব গাছেই খুব সুন্দর করে ফুটে আছে একেকটা ফুল।
আর ছাদের এক পাশে একটা দোলনা দেওয়া আছে।আমি দোলনা দেখে দৌড়ে দোলনায় বসে হেসে হেসে দোল খেতে লাগলাম।কি যে আনন্দ লাগছে আমার বলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।আর আমার এসব কান্ড দেখে Eunjoon হাসতে লাগলো।তারপর হাত দিয়ে ছাদের পাশের দেওয়ালে কবুতরের বাসা দেখিয়ে দিলো।
আমি : কবুতর,,,,,ওয়াও,,,,,,এসব কে করে?
Eunjoon : কে আবার ভাইয়া।
আমি : taehu?
Eunjoon: আরে না। taehu ভাই তো হোস্টেলে থাকে এসব দেখাশুনা করতে পারবে না।আর এগুলা সব Taehyung ভাইয়ার।
আমি : মানে?
Eunjoon : এই যে দেখোনা,গার্ডেন আর কবুতর আর এই দোলনা সব ভাইয়া করছে।সবই তার।
ভাবি কবুতর ধরবা?
আমি : আরে না।ওরা ব্যাথা পাবে।
আসলে আমি কথাটা এড়িয়ে গেছি তার কারণ হলো.........আমি কবুতর,মুরগি,বিড়াল,বড় মাছ,ইত্যাদি সব প্রাণীকে ভয় পাই ধরতে বা আমার কাছে আসলে।
যখন মাছ লাফাই তখন বেশি ভয় লাগে।আর তেলাপোকা তো কথায় নাই।আমি মরে যাবো।
কোনো চোর বা ডাকাত আমাকে চাকু বা পিস্তল ধরা লাগবে না কারণ আমি এগুলো তেমন একটা ভয় পায় না কিন্তু যদি তেলাপোকা,টিকটিকি এসব দিয়ে বলে,"এই মেয়ে তোর কাছে যা আছে তারাতারি সব বের করে দে নইলে এসব তোর গায়ে ঢেলে দিবো।"
আর আমি তখনি কোনো চিন্তা ভাবনা ছাড়াই সব দিয়ে দিবো।
এর পরে আমরা ছাদ থেকে নেমে আসলাম।আর আমি শাওয়ার নিতে ওয়াশরুমে গেলাম।শাওয়ার নিয়ে হালকা আবার একটু সেঝে বেলকুনিতে গিয়ে দাড়ালাম। রাস্তার দিকে থাকিয়ে আছি এমন সময় পিছন থেকে কেউ এসে ভয় পাইয়ে দিলো কানে জোরে শব্দ করে।
আমিতো সত্যিই ভয় পাইছি।পিছনে দেখি eunjoon।
Eunjoon : ভাবি ভয় পাইছে।
আমি : ওমা, ভয় পাবোনা।পিছন থেকে এভাবে এসে কেউ ভয় দেখায় নাকি?
Eunjoon : সরি,,,,,,,,,,, ভাব্বি
কানে ধরবো?
আমি : দুষ্টুমি করে,,,,,,,,হা ধরো
Eunjoon আমার কানে হাত দিয়ে বললো ধরলাম।
আমি : ওই শয়তান বলে ওর কান টেনে দিলাম।আর ও জিব্বায় কামড় দিয়ে এগেইন সরি বললো।
আর আমি ইটস ওকে।।
Eunjoon:চলো লান্চ করতে নিছে আম্মু ওয়েট করছে।
আমি : চলো
 

Post a Comment

Previous Post Next Post

Comments

Facebook