বাবা মার ইচ্ছাতেই আর আমার পরিপূর্ণ সম্মতিতে বিয়েটা হয়েছে।আর বিয়েতে অসম্মতির কোনো কারণ আমার নেই,কেননা আমার কোনো রিলেশন ছিলো না।হা আমি কাউকে ভালবাসিনি।কারণ আমাদের পরিবারে এসব অপচন্দ। তাই আমারও অপচন্দ।
অপচন্দ বললে ভুল হবে বাদ্যগত ভাবেই অপচন্দটা বলতে হলো।
আমারও ইচ্ছা ছিলো রিলেশন করার।কেউ একজন আমার জিবনে আসুক।আমাকে অনেক ভালবাসুক।যার সাথে কিছু সময় কাটানো যাবে।যার হাতে হাত রেখে মনের অনেক কথা শুনানো যাবে।
যার সাথে থেকে নিজের সব স্বপ্ন পূরন করা যাবে।আর মেইনলি তার সাথেই আমার প্রিয় খাবার আইসক্রিম,,বার্গার আর ফুচকা খাওয়া হবে।
সব কিছুর শেয়ারিং তার সাথেই হবে।আর তার সাথে সারা জিবনটা কাটিয়ে দিবো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
কিন্তু,,,,,সব স্বপ্নই রয়ে গেলো।বুকের মাঝে সেই সব স্বপ্নগুলোকে পাথর চাপা দিয়ে এই বিয়েটা করতে হলো।এই গুলা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ একটা শব্দ কানে আসলো,,,আর তখনই চোখ চারদিকে ঘুরিয়ে দেখতে লাগলাম যে শব্দটা কোনদিক থেকে আসলো।
হুম দেখলাম শব্দটা দরজার কাছ থেকেই এসেছে মানে কেউ একজন দরজা খুলে ভিতরে ঢুকছে।আর আমার মনে কেমন জানি ভয় হচ্ছে।
ওহ আচ্ছা সরি আমার নামটা তো বলাই হলো না।।আমার নাম হচ্ছে y/n।।আর আমি ইন্টার ফাইনাল দিয়েই বিয়ের পিড়িতে বসছি তবে একটু দুষ্টু টাইপের।
আর আমার এই যে এই বরটার নাম kim Taehyung।
আমার ঐ যে ওনি মানে বরটা আরকি তার বাবার সাথে ব্যবসার কাজ করে মোটামুটি সব দিক থেকেই ছেলে ভালো তাইতো আমার আব্বু আর দেরি করেনি আমার বিয়েটা দিয়েই দিলো।।।
হঠাৎ ঐ যে ওনি রুমে ঢুকলো ধপাস করে দরজাটা লাগিয়ে ডিরেক্ট লাইটটা অফ করে বিছানার মাঝ বরাবর একটা কোলবালিশ দিয়ে এক পাশে শুয়ে পরলো।
আজব!
আমায় কিছু বললো ও না!
তারপর আমি আর কিছু না বলে শুয়ে পরলাম।আর সারাদিনের ক্লান্তি থাকাতে শুয়ার সাথে সাথে দুচোখে রাজ্যের ঘুম নেমে আসলো।তবে একটা ফিলিংস কাজ করছিলো তাও আবার মনে মনে,,
যে জিবনে কোনো ছেলের পাশে কখনো বসিনি পর্যন্ত,,কিন্তু এখন এক রুমে,,এক খাটে।
পাশাপাশি জাস্ট একটা কোলবালিশের ডিসটেন্স।
সকালে ঘুম ভাঙ্গলো আমার ননদের ডাকে।
আমার বরের মানে kim Taehyung দুই ভাই আর এক বোন। আমার ঐ যে ওনিটা বড় আর তারপরে তার ছোট ভাই taehu আর ছোট বোন eunjoon।
আর আমাকে এখন eunjoon ডাকতে এসেছে।যখন আমি চোখ একটু খুললাম তখনই eunjoon চলে গেলো।।আর আমি তো শুয়া থেকে বসতে বসতে আলসি ভাঙ্গছিলাম আর বড় করে হা করে হাই তুলছিলাম।
মুখে হাত দিতে হঠাৎ সামনে খেয়াল করলাম আমার ঐ যে ওনি সামনে সোফায় বসে খবরের কাগজ পড়ছে আর আড়চোখে আমায় দুই একবার দেখছে।
আমি তাকে দেখে হঠাৎ লজ্জা পেলাম।
তাই তারাতারি চোখ নামিয়ে ওয়াশরুমে গেলাম ফ্রেস হতে।।ফ্রেস হয়ে রুমে এলাম আর দেখলাম ওনি এখনও বসেই আছে সোফায়।
আমি আমার বিয়ের শাড়ি আর সব গয়না গুছিয়ে রাখছি ভারী গুলা রেখে দিচ্ছি বক্স ভরে আর হালকা কিছু মানে দুইটা চুড়ি,,এক জোড়া কানের দুল,,দুইটা রিং আর একটা চেইন পরলাম।ফ্রেশ হওয়ার সাথে শাওয়ারটাও সেরে নিলাম তাই নতুন একটা শাড়িও পরতে হলো।শাড়ি অবশ্য পরতে পারিনা তারপরও আম্মু থেকে বিয়ের আগে দেখেছিলাম তার থেকে অনুমান করেই কোনোভাবেই পরলাম।
হঠাৎ আয়নায় দেখলাম আমার বরটা রুম থেকে বাইরে চলে গেছে।।উফফ এতক্ষণ যা নার্ভাস লাগছিলো না।এখন ইচ্ছে মতো রেডি হতে পারবো।
সব ঠিকটাক করে রেডি হয়ে রুমে বসে রইলাম।বের হতে লজ্জা করছে এটাতো আর নিজের বাড়ি না যে হুট করেই দৌড় দিবো তাই।
এমন সময় আমার ননদ eunjoon আবার আসলো আর আমায় দেখে বললো,"বাহ ভাবি তুমিতো খুব এক্সপার্ট।সব ফিটফাট।টিপটপ হয়ে গেলা বাই দা ওয়ে শাড়িটাতে তোমায় না খুব মানিয়েছে।"
আমি তাকে খুশি করার জন্যে বললাম," দেখতে হবেনা কার ভাবি তাই আর কি।"
Eunjoon হাসতে লাগলো।তারপর বললো," চলো মা নাশতা খেতে ডাকছে।"
নীচে গেলাম eunjoon এর সাথে।গিয়ে দেখি সবাই টেবিলে বসা আর টেবিল নাশতায় সাজানো।বিয়ে বাড়ি বলে কথা।
সবাই নাশতা করছে কিন্তু আমি লজ্জায় কিছু খেতে পারছি না।আর পেটে তো এক সাগর ক্ষিধা।
হঠাৎ খাওয়ার এক পর্যায় আমার শাশুরি মা বললো,"যে আজতো লান্চে মেহমান আসবে বৌয়ের বাড়ি থেকে।তাই সবাই সবকিছু ঠিকটাক করে ফেলো।"
একেক জনকে একেক কাজের দায়িত্ব দিলো কিন্তু আমায় কিছু দিলোনা।ভালোই হলো,,এমনিতে আমি কাজ করিনা। হুহ কাজ করতে ভালো ও লাগেনা।।তাইতো আম্মু বলতো কামচোরা।হি হি সত্যিই আমি কামচোরা ছিলাম,,আছি আর থাকবো।
তো নাশতা সেরে উপরে রুমে চলে এলাম।
দেখি আমার ঐ যে ওনিটা মানে বরটা আমার দিকে চেয়ে আছে,যেনো আমি তাদের বাসার কাজের বুয়া। কি রাগান্বিত দৃষ্টি।
যেনো যেনো আমি তার অফিসের পি এ।মনে মনে গালি দিতে লাগলাম রাবিশ।তারপর ভাবলাম রুমটা একটু ভালোকরে দেখি রুমটা ততোটা ছোটও নয় আবার এতোটাও বড় নয় তবে অনেক পরিপাটি।সাজানো ঘুচানো সব ফার্নিচার।একটা বেলকুনি আছে যা আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে।
তারাতারি বেলকুনিতে চলে গেলাম।বেলকুনি থেকে সব বিল্ডিং দেখা যায় নীচে রাস্তা দেখা যায়।তারচেয়ে বড় কথা হলো দুই তলার বেলকুনি তো বাতাস টাও আসছে হালকা ভাবে।আর তার চেয়েও সুন্দর বেলকুনিতে তিনটা টপ দেখে।
একটা গোলাপের ছোট্ট চারা যাতে একটা কলি এসেছে।আর দশটার ফুল আর একটা বেশি ফুলের ছোট গাছ তাতেও ছোট ছোট ফুল ফুটেছে।কি মিষ্টি ঘ্রাণ,,
এগুলা ঘুরে ঘুরে ধরে ধরে দেখছিলাম হঠাৎ এমন সময় মোবাইলের রিং টোনের শব্দ কানে ভেসে এলো....