সকালে
আমি,রুশা আর মেহেক ঘুম থেকে উঠতে উঠতে ৮ঃ০০ টা বেজে গেছে।
আমরা তিনজনই উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
রহিম চাচা আমাদের খেতে ডাক দিল।
আমরা রেডি হতে লাগলাম।
আজকে আমি কালো কালারের চুরিদার পরেছি।চুলগুলা মাঝখান দিয়ে সিতা করে দুইপাশে ছেড়ে দিলাম। হাতে বড়ভাইয়ার দেওয়া প্লাটিনামের ব্রেসলাইট পরলাম।চোখে একটু কাজল আর হালকা লিপস্টিক দিলাম।
রুশা আজকে সাদা কালারের লং জামা পরেছে। কয়েকটি চুল পিছনে ক্লিপ দিয়ে আটকে বাকি গুলা ছেড়ে দিল।চোখে কাজল আর লিপস্টিক।
মেহেক আজ জাম কালারের থ্রিপিস পরেছে আর হালকা সেজেছে।
ব্যাস আমরা তিনজনই রেডি হয়ে গেলাম।
আমরা সিড়ি দিয়ে নামছি।রহিম চাচা,চাচি সহ সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
আমিঃকি হলো চাচা,চাচি এভাবে হা করে তাকিয়ে আছ কেন?(অবাক হয়ে)
রহিম চাচাঃতোমাগো তিনজনরে খুবি সুন্দর লাগতাছে।
চাচিঃহ আম্মা তোমারে তো সবচেয়ে সুন্দর লাগতাছে।
রুশাঃএটা কিন্তু ঠিক না চাচি। (কান্নার সুরে)
মেহেকঃএকদম....
আমি,চাচা আর চাচি ওদেরকে দেখে হেসে দিলাম।
চাচিঃতোমাগোও সুন্দর লাগতাছে।
রহিম চাচাঃতোমরা তারাতারি খাইয়া লও।আমি গাড়ি বাহির করতে কইতাছি।
আমিঃঠিকাছে চাচা।
তারপর আমি,রুশা আর মেহেক খেয়ে আমরা গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পরলাম।
In bangladesh airport
আমার দুইভাই এইমাত্র বাংলাদেশে এসে পৌছালো।আমার দুইভাইয়ের জন্য কতোগুলা গার্ডস আর গাড়ি অপেক্ষা করছে।আমার দুইভাইকে রিসিভ করার জন্য অনেক গার্ডস আসলো।আমার ভাইয়ারা হাটছে তার পিছনে পিছনে অনেকগুলা গার্ডস।
বড়ভাইয়া আজকে সাদা প্যান্ট আর কালো শার্ট,হাতে সাদা আর কালো কালারের একটা ব্লেজার,পায়ে শু,হাতে ঘড়ি আর চুলগুলু একসাইডে স্পাইক করা।
আর ছোটভাইয়া নীল কালারের শার্ট আর সাদা কালারের প্যান্ট,হাতে সাদা আর নীল কালারের একটা ব্লেজার, পায়ে শু আর চুলগুলা ওপর দিকে স্পাইক করা,হাতে ঘড়ি।
আমার দুইভাইয়ের দিকে পুরা এয়ারপোর্টের সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।বিশেষ করে মেয়েরা।
আমার ভাইয়ারা এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে কালো কালারের BMW গাড়িতে উঠল।আর সামনে পিছনে অনেক গুলা কালো গাড়ি।
গাড়িতে উঠে বড় ভাইয়া গার্ডসদের বলল
বড়ভাইয়াঃটুকুর ভার্সিটিতে চলো।
ভাইয়ার কথা অনুযায়ী সব গাড়ি আমার ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল।
বড়ভাইয়াঃছোটু চকলেটগুলা নিয়েছিস তো?
ছোটভাইয়াঃহুম।মিস্টির পছন্দের সব চকলেট নিয়েছি।তাও আবার বক্স পুরা।
বড়ভাইয়াঃযদি রাগ না ভাংগে তাহলে তোর খবর আছে।
ছোটভাইয়াঃরাগ অবশ্যই ভাঙবে।দেখে নিও।
বড়ভাইয়াঃভাঙলেই ভালো না হলে তোর খবর আছে।
In varsity
আমি একটা ক্লাস করে ক্যান্টিনে চলে এলাম কারন আমার ভালো লাগছে না।ভাইয়াদের ওপর খুব রাগ হচ্ছে।
আমি একটা টেবিলে বসে আছি।আমার প্রচুর রাগ উঠতাছে কেন আমি নিজেই বলতে পারবো না।
আমার এখন কান্না করতে ইচ্ছা করতাছে।
আমি কোনমতেই আমার রাগ কন্ট্রোল করতে পারছি না।
এমন কেন হচ্ছে আমি নিজেই বলতে পারবো না।
আমি চুপ করে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে বড় বড় শ্বাস নিয়ে রাগ কামানোর চেষ্টা করছি।কিন্তু পারছি না।
ঠিক তখনি Jimin আর তার দলবল ক্যান্টিনে ডুকল।
তারা ঠিক আমার পাশের টেবিলে বসলJimin ঠিক আমার সোজাসোজি বসল।
Jimin আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
Jimin : এই মেয়েটা এতো সুন্দর কেন?(মনে মনে)
আর রিধি আমার দিকে রাগিভাবে তাকিয়ে আছে।
রিধিঃএখনি আমি আমার চড়ের বদলা নিব।
আকাশঃদরকার কি হুদাই ঝামেলা করার!
নিলাঃএকদম ঠিক।
রিধিঃJimin তুমি কি বলো?(নেকা সুরে)
Jimin :দরকার কি ঝামেলা করার।
সাদঃদরকার নাই মানে!এই চল রিধি আমিও যাবো তোর সাথে। থাপ্পড় ও আমাকেও মেরেছে।
এই বলেই দুইজন আমার কাছে আসলো।
আমি দেখেও না দেখার ভান করলাম।কারন আমি জানি এখন আমি কি করব আমি নিজেও জানি না।
রিধিঃএই মেয়ে তোমার সাহস তো কম না তুমি ওইদিন আমার আর সাদের গায়ে হাত তুলেছো?(রেগে)
আমিঃ................
রিধিঃকথা বল কথা বলিস না কেন?
আমি..............
সাদঃমনে হয় ভয় পেয়ে গেছে?
এই বলেই তারা দুইজন হাসতে থাকে।
আমি আর পারলাম না।আমি দাঁড়িয়ে এক জগ পানি রিধির মাথায় ঢেলে দিলাম।তারপর সাদকে একটা জোরে থাপ্পড় মেরে বের হয়ে মাঠে চলে আসলাম।
Jimin রা এবার রিধি আর সাদের কাছে আসলো।
Jimin :এতো বড় সাহস আমার ফ্রেন্ডদের গায়ে হাত তুলে। চল তো।
এই বলে তারা সবাই আমার পিছন পিছন মাঠে আসতে লাগলো।
আমি মাঠের এককোণায় বসে কান্না করতে লাগলাম।জানি না কেন।
Jimin রা আমার কাছে আসলো।রুদ্র আমাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই গেইট দিয়ে সা সা করে ১০ টার মতো গাড়ি ডুকল।
তারপর একটা BMW গাড়ি ডুকলো।
আমি মাঠের মাঝখানে চলে আসলাম।
সবাই অবাক হয়ে গাড়িগুলার দিকে তাকিয়ে আছে।
আকাশঃকোন মন্ত্রি এলো নাকি।
নিলাঃজানি না।
Jimin :দেখা যাক কে বের হয়।
অনিলঃযেই বের হোক তারা মনে হয় হেব্বি বড়লোক।
রাজঃহতে পারে তাদের কোন রিলেটিভ এইখানে পড়ে।
Jimin :হতে পারে।কিন্তু আমাদের কলেজ এ এতো বড়লোক কেউ পড়ে আর আমরাই জানি না।
আমি তাকিয়ে আছি কান্না বন্ধ করে।
দেখলাম BMW গাড়ি থেকে আমার ভাইয়ারা নামল।
আমি কিছু না ভেবে মুর্তির মত দারিয়ে আছি।আমার মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন দেখছি।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।আমার মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন দেখছি।
দেখলাম আমার ভাইয়ারা আমার দিকে হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে।আমি নিজেকে চিমটি কাটলাম।না ওরা সত্যিই এসেছে।
আমি দৌড়ে গিয়ে ভাইয়াদের জড়িয়ে ধরলাম।
সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
ঠিক তখনি আমার কালকের রাতের কথা মনে পরে গেল।আমি তাদেরকে ছেড়ে ক্যান্টিনে চলে গেলাম।
আমার ভাইয়ারা বুঝতে পারলো।
বড়ভাইয়াঃটুকু শুন।টুকু
ছোটভাইয়াঃমিস্টি।
দুইজনেই আমার পিছনে পিছনে আসতে লাগলো।
আর এইদিকে আমার ভাইয়াদের দেখে সব মেয়েরা হা হয়ে তাকিয়ে ছিলো।
সবাই আমার ভাইয়াদের ওপর ক্রাশ খাইছে।
Jimin রা সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো।
আকাশঃ এরা কারা?একজন হইলে বুঝতাম যে ফারিয়ার বয়ফ্রেন্ড কিন্তু এরা তো দুইজন।
Jimin :চল ক্যান্টিনে গিয়ে পুরা কাহিনী টা দেখি।
এই কথা বলার সাথে সাথে সবাই অবাক হয়ে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে।
Jimin :কি হলো?
রাজঃএই কি আমাদের সেই Jimin যে কোন মেয়ের দিকে তাকাতো না?কোন মেয়েকে পাত্তাই দিত না?
আকাশঃযাই বল মেয়েটার কিন্তু সেই রাগ আর জেদ।
Jimin :হয়েছে এবার চল।
মেহেক আর রুশাও ক্লাস শেষ করে ক্যান্টিনে আসলো।
অন্যদিকে
আমি ক্যান্টিনে গিয়ে একটা টেবিলে বসে আছি। রাগ যেন বেড়েই চলেছে।এই ক্যান্টিনটা অনেক বড় তাই প্রায় সব মেয়েরা এসে বসে আছে শুধু মাত্র এখানে কি হয় তা দেখার জন্য।
আমি বসে আছি। আমার ভাইয়ারা আমার পাশে গিয়ে বসলো। আমি মুখ তুলে তাকালাম।আমার মুখ দেখে ভাইয়ারা ভয় পেয়ে গেলো কারন অতিরিক্ত রাগের ফলে আমার মুখ লাল হয়ে গেছে।
বড়ভাইয়াঃকি হয়েছে টুকু?
আমিঃতোমরা এখানে কেন এসেছো?
ভাইয়ারাঃসরি প্লিজ রাগ করে থাকিস না।তোকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্যই এতো কিছু।
আমি কিছু বললাম না।
ঠিক এমন সময় রুশা আর মেহেক এলো।
ওরা এসে কোন কথা না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
ছোটভাইয়াঃকি হয়েছে বলবি তো?
আমিঃআমার অনেক রাগ উঠতাছে কেন তা আমি নিজেও জানি না।
বড়ভাইয়াঃওকে ওয়েট।ছোটু এই ক্যান্টিনের সব কাচের গ্লাস নিয়ে আয়।
সবাই অবাক হয়ে ভাইয়ার কথা শুনছে।
ছোটভাইয়া আর দেরি না করে গার্ডসদের বলল।মুহুর্তের মধ্যে সব গ্লাস আমার সামনে আনা হলো।
বড়ভাইয়াঃনে টুকু এবার একটা একটা ভাঙ।
ছোটভাইয়াঃহুম ভাইয়া ঠিক বলেছে।মিস্টি তোর যতগুলা ইচ্ছা ততগুলা ভাঙ।
সবাই এবার অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
ক্যান্টিনের দায়িত্বে যিনি আছেন তিনি এসে বললেন।
ক্যান্টিনের পরিচালকঃএখানে কি হচ্ছে এগুলা।(রেগে)
ছোটভাইয়াঃআওয়াজ নিচে।(চিল্লিয়ে)আমার বোনের সামনে কেউ উচা গলায় কথা বললে আমি তাকে লাশ করে দিব।
ভাইয়ার চিল্লানিতে সবাই কেপে উঠে।
Jimin রা একজায়গায় দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখতে থাকে।
বড়ভাইয়াঃছোটু ঠান্ডা হ।আর এই যে আপনি। আপনি জানেন আমরা কে?গিয়ে আপনার প্রিঞ্চিপালকে খবর দিন।গিয়ে বলুন লন্ডন থেকে Kim namjoon আর Kim Seokjin এসেছে।
ভাইয়া আর কিছু বলতে পারলো না আমি গ্লাস ভাঙা শুরু করলাম।কারন আমার যেন কমছেই না।গ্লাস ভাঙতে ভাঙতে আনার হাত দিয়ে কাচ ডুকে গেলো।
আমিঃআহহ।
ছোটভাইয়াঃএইইই মিস্টি কি হয়েছে তোর?(চিল্লিয়ে কান্নার সুরে)
বড়ভাইয়াঃচল তারাতারি হসপিটালে নিয়ে চল।
রুশাঃহসপিটালে নেয়া লাগবে না আমাদের এখানেই অভিজ্ঞ ডাক্তার আছে।
ছোটভাইয়াঃতাহলে বসে আছো কেন ডাকো তারাতারি।(ধমক দিয়ে)
ভাইয়ার ধমকে রুশাসহ সবাই কেপে উঠে।
তারপর রুশা গিয়ে ডাক্তারকে ডেকে আনলে উনি এসে আমার হাত ব্যান্ডেজ করে দেয়।
আমিঃব্যাথা আমার লেগেছে তোমাদের না।এমন করছো যেন ব্যথা আমার না তোমাদের লাগছে।
বড়ভাইয়াঃএতো কেয়ারলেস কেন তুই?একটু আস্তে আস্তে ভাঙবি তো..
ছোটভাইয়াঃরাগ কমেছে?
আমিঃহুম কিছুটা..
বড়ভাইয়াঃও শিট আমি কি করে ভুলে গেলাম!।
ছোটভাইয়াঃকি ভুলে গেলে?
বড়ভাইয়াঃএখন তো টুকুর পিরিয়ড টাইম তাই ওর মুড সুইং হচ্ছে।আমি এতটা কেয়ারলেস কি করে হলাম।
ক্যান্টিনের সবাই হা হয়ে আমাদের দেখছে।কেউ কেউ বলছে
-এ কেমন মেয়ে যে পিরিয়ডের কথা ভাইয়াদেরকে বলে!
ভাইয়ারা এসব কথা শুনতে পেল।কিন্তু আমি ইশারায় মানা করলাম কিছু না বলতে।তাই ভাইয়ারা কিছু বলল না।
আমিঃছোটভাইয়া তুমি রুশার সাথে মিসবিহেভ করেছে ওকে সরি বলো।
ছোটভাইয়াঃKim Seokjin তার ভাই আর বোন ছাড়া কাউকে সরি বলে না।
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই বড়ভাইয়া বলল
বড়ভাইয়াঃরুশা আসলে তুমি কিছু মনে কর না ও এরকমি একটু রাগি।
মেহেকঃএকটু!!!উনি একটু না অনেক খানিই রাগি।
বড়ভাইয়া এবার মেহেকের দিকে খেয়াল করলো।ভাইয়া অনেকক্ষন তাকিয়ে থেকে তারপর মুচকি হেসে বলল
বড়ভাইয়াঃপিচ্ছি পাগলি।
আমি আর ছোটভাইয়া ছাড়া আর কেউ শুনতে পায় নি।আমরা দুইজন বাকা চোখে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
বড়ভাইয়া কাশি দিয়ে উঠলো। ঠিক তখনি প্রিঞ্চিপাল আসলো।
প্রিঞ্চিপালঃআরে স্যার আপনারা কখন আসলেন?(উত্তেজিত হয়ে)
বড়ভাইয়াঃ১ ঘন্টা হলো। তো আপনাকে যে জন্য ডেকেছি তা হলো আমাদের বোন আপনার ক্যান্টিনের সব গ্লাস ভেঙে ফেলেছে।আমি একটা চেক লিখে দিচ্ছি সব আবার কিনে নিবেন।
প্রিঞ্চিপালঃআরে না না লাগবে না।
ছোটভাইয়াঃভাইয়া আপনাকে জিজ্ঞাসা করে নাই।ভাইয়া যা বলছে তাই করেন।তারাতারি চেকটা নেন।
প্রিঞ্চিপাল ভয়ে ভয়ে চেকটা নিল।
প্রিঞ্চিপালঃআমার রুমে চলেন ওখানে......
আর কিছু বলার আগেই ভাইয়ারা ইশারায় থামিয়ে দিল আর যেতে বলল।
প্রিঞ্চিপাল চলে গেলো।
Jimin :বাহ বাহ বোনের জন্য এতকিছু!!!!
নিলাঃআর ও ওর ভাইয়াগুলার মতই কিউট হইছে।
আকাশ: Y/N যে এতো বিগ ফ্যামিলি থেকে বিলং করে তা আমরা এতোদিন কেউ বুঝতে পারি নাই।
রাজঃএই মেয়ের নাকের ডগায় রাগ থাকে আর রিধি আর সাদ কিনা গেছে ওর সাথে লাগতে।
অনিলঃতোদের ভাগ্য ভালো Y/N তোদের কথা কিছুই তার ভাইয়াদেরকে বলে নাই।
তখনি রুশা পিছন থেকে বলে উঠে
রুশাঃরিধি আপু আর সাদ ভাইয়ার জন্য Y/N একাই যথেষ্ট।
Jimin:তুই এখানে বাড়ি যাস নাই?
রুশাঃযাবো।
Jimin :দাড়া এবার থেকে আমি তোকে নিয়েও আসবো আর বাড়িতে নিয়েও যাবো।
রুশাঃসত্যিইইইই।
Jimin :হুম রে পাগলি।
এই বলে রুশা আর Jimin চলে গেলো।
মেহেকঃআজ আমার কোন ভাই নাই বলে।
তখনি আমি পিছন থেকে বলে উঠলাম।
আমিঃকে বলেছে নাই?আমার ভাইয়ারা তো তোরই ভাইয়া।(দুস্টু হেসে বড়ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
আমার কথা শুনে বড়ভাইয়া কাশতে শুরু করলো।
ছোটভাইয়াঃআমার কোন সমস্যা নাই।আমি রাজি।আমার মনে হয় ভাইয়াও রাজি।তাই না ভাইয়া?(বাকা হেসে)
বড় ভাইয়া কিছু না বলে আমাদের দিকে অসহায়ভাবে তাকিয়ে আছে।
মেহেকঃতাহলে তো ভালোই।আমি দুইটা ভাইয়া ফেলাম।
ওর এই কথা শুনে আমি আর ছোটভাইয়া ফিক করে হেসে দিলাম।
বড়ভাইয়াঃবাড়ি যাওয়া যাক। আর মেহেক তুমিও বাড়ি যাও।
মেহেকঃআচ্ছা।
এই বলে মেহেক চলে গেলো। আমরাও চলে আসলাম আমাদের বাড়ি।
বাড়িতে ডুকতেই রহিম চাচা দৌড়ে আসল।
রহিম চাচাঃতোমাগো আসতে কোন কস্ট হয় নাই তো আব্বারা?
ভাইয়ারাঃনা চাচা।(হালকা হেসে)
আমিঃওয়েট ওয়েট তার মানে সবাই জানতো শুধু মাত্র আমি ছাড়া!!
এই বলে আমি রাগ করে সোফায় গিয়ে বসে পরলাম।
ছোটভাইয়াঃসরি সরি সরি
বড়ভাইয়াঃসরি সরি সরি টুকু। তোকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্যই এতো কিছু।
আমিঃকোন কথা বলবা না।
ছোটভাইয়াঃকিন্তু আমি যে ৪ বক্স কিটকেট,সেলিব্রেশান চকলেট এনেছি ওইগুলা কি করবো?(চিন্তিত হয়ে)
বড়ভাইয়াঃটুকু যেহেতু কথাই বলবে না তাহলে আর কি করবি ফেলে দে।
আমিঃএই না না কে বলেছে আমি রাগ করেছি?আমি একদমি রাগ করি নাই।কই আমার চকলেট গুলা দাও।
আমার কথা শুনে ভাইয়ারা হেসে দিল।তারপর আমার দুইগালে দুইজনে একসাথে চুমু দিয়ে চকলেটগুলা দিল।
আমিও চকলেটগুলা পেয়ে ওদেরকে চুমু দিলাম।
আমাদের এসব কান্ড দেখে রহিম চাচা,চাচি হেসে দিল।
রহিম চাচাঃতোমরা গিয়া ফ্রেশ হইয়া আইয়ো আমি আর তোমাগোর চাচি খাবার দিতাছি।
আমরা তিনজন একসাথে বললাম
-আচ্ছা।
বড়ভাইয়াঃ দেখবো কে আগে ফ্রেশ হয়ে আসতে পারে।
আমি আর ছোটভাইয়াঃআমি আগে আসবো।
এই বলে আমরা তিনজনই দৌড় দিলাম নিজেদের রুমের দিকে।
আমাদের এসব কান্ড দেখে সবাই হাসতে হাসতে শেষ।
In Park vila
সবাই খেতে বসেছে।Jimin ,রুশা,নিহাল, কথা আর তাদের দাদুভাই।
নিহালঃআজ নাকি লন্ডন থেকে Kim Namjoon আর Kim Seokjin আসছে?
Jimin :হুম বাবা।
কথাঃKm Namjoon আর Kim seokjin ওরা নাকি!!
রুশাঃহুম মা।ওরা ওদের বোনের জন্য এসেছে।
দাদুভাইঃওদের বোন!!!!!
রুশাঃহুম দাদুভাই....Kim Y/N .
কথাঃওই যে মেয়েটাকে আমি দেখলাম ওই মেয়েটা??
রুশাঃহুম মা।
কথাঃকিন্তু মেয়েটার মধ্যে একদমি অহংকার নাই!!
রুশাঃহুম মা ও খুবই ভালো মেয়ে।
দাদুভাই আর কিছু না Jimin এর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো
রাতে
আমি,রহিম চাচা আর চাচি সবাই খাবার টেবিলে গালে হাত দিয়ে বসে আছি।কারন আজকে নাকি আমার দুইভাই আমার জন্য রান্না করবে।
আমিঃচাচা আজকে কি আমাদের ভাগ্যে খাবার জুটবে নাকি রাতে না খেয়ে থাকতে হবে??
রহিম চাচাঃআল্লাহই জানে আম্মা
চাচিঃআমাগোর তো ঢুকতেই দিতাছে না রান্না ঘরে।
আমিঃকি জানি করতাছে??
রহিম চাচাঃআম্মা বলি কি তুমি একবার ডাক দাও।
আমিঃওকে।ভাইয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।(জোরে চিল্লিয়ে)
চাচিঃমাগো মা আমার কান শেষ।
চাচির কথা শুনে আমি আর চাচা হাসতে হাসতে শেষ।
আমি আবার ডাক দিলাম।
আমিঃভাইয়ায়ায়া আমার খুবই খুদা লাগছে।
রান্নাঘর থেকে ছোটভাইয়া বলল
ছোটভাইয়াঃআরেকটু মিস্টি।
আমিঃতারাতারি আসো।
প্রায় ১০ মিনিট পর ভাইয়ারা রান্না করে এসেছে।
ওদের রান্না দেখে আমার,চাচার আর চাচির মাথায় হাত।
বড়ভাইয়াঃকেমন লাগলো আমাদের সারপ্রাইজ?(ভাব নিয়ে)
আমিঃখুব ভালো। সেদ্ধ সবজি খাওয়ার মজাই আলাদা।
ছোটভাইয়াঃআমি জানতাম মিস্টির পছন্দ হবেই।
আমিঃখুব পছন্দ হয়েছে আমার।
এই বলেই আমি খেতে লাগলাম।
রহিম চাচা আর চাচি আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
রহিম চাচাঃএই হইলো বোনের ভালবাসা.(ফিসফিস করে চাচিকে)
চাচিঃহুম ঠিক কইছো।
ছোটভাইয়াঃতোর খুব ভালো লাগছে তাই না?
আমিঃহুম অনেক ভালো লাগছে।
বড়ভাইয়াঃদাড়া আমি একটু খেয়ে দেখি।
ছোটভাইয়াঃহুম আমিও খাব
কিন্তু ওরা খাওয়ার আগেই আমি খাবারের প্লেটটা নিয়ে নিলাম।
ভাইয়ারা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
আমিঃঅনেক মজা হইছে তাই আমি সব খাব।তোমরা পরে খেও।
বড়ভাইয়াঃপাগলি একটা । (হালকা হেসে)
ছোটভাইয়াও একটা মুচকি হাসি দিল।
আমিঃচাচি যাও ভাইয়াদের জন্য বিরিয়ানি রান্না করো।
চাচিঃআমি এহনি যাইতাছি।
এই বলে চাচি চলে গেলো রান্না করতে।
চাচি যেতেই ভাইয়ারা আমার কাছে আসলো।
আমি খেয়ে যাচ্ছিলাম।
বড়ভাইয়াঃখুব বড় হয়ে গেছিস রে তুই টুকু। (আমার মাথায় হাত রেখে)
ছোটভাইয়াঃআমাদের যাতে খারাপ না লাগে সেইজন্য এতো কস্ট করে এই অখাদ্যগুলা খাচ্ছিস?
আমিঃকই না তো খুব মজা হয়েছে।
বড়ভাইয়া এবার প্লেট সরিয়ে নিল।
বড়ভাইয়াঃহয়েছে আর পাকামো করতে হবে না।
তারপর আমরা তিনজন মিলে কার্টুন দেখতে লাগলাম।
একটু চাচি খাওয়ার জন্য ডাক দিল।
আমরা তিনজন একসারির তিনটা চেয়ারে বসলাম। আমি দুইভাইয়ার মাঝখানে বসলাম।কারন আমার ভাইয়ারা সবসময় আমাদের খাইয়ে দেয়।
আমিঃআর খাব না।এবার তোমরা খাও।
বড়ভাইয়াঃআচ্ছা যা।
আমি রুমে চলে আসলাম।
in Park vila
দাদুভাইঃআসবো দাদুভাই?
Jimin: আরে দাদুভাই আসো।
দাদুভাইঃআচ্ছা Y/N মেয়েটা সম্পর্কে আমাকে কিছু বল তো।
Jimin: কেন?
দাদুভাইঃনা মানে এমনি।
Jimin: জানো দাদু মেয়েটা অনেক সাহসি।তা না হলে ভাবো আমাকে থাপ্পড় মারে।যেই jimin এর দিকে কেউ তাকিয়ে কথা বলতে সাহস পায় না ওই রুদ্রকে ও থাপ্পড় মেরেছে।প্রচন্ড রাগি আর অনেক জেদি।কিন্তু দেখতে অনেক সুন্দর। জানো দাদু তার ডানগালে ছোট একটা তিল আছে আর গলায় একটা লাল তিল আছে।কিন্তু হে একটা কথা মানতে হবে যে মেয়েটা অনেক মানবিক,মিশুক।আর ভাইয়াদের জানপাখি।
দাদুভাইঃবাহ বাহ মাত্র কয়েকদিনেই মেয়েটাকে এতো ভালোভাবে স্ক্যান করে ফেলেছিস?
Jimin: আরে না দাদু তেমন কিছু না।
দাদুভাইঃভালোবাসিস??
Jimin: কি যে বল না দাদু?আমি আর ওই মেয়েকে!কখনও না।
রুশাঃতাহলে মধ্যরাতে ওর বাসায় যাস কেন?
Jimin অবাক হয়ে পিছনে তাকায় দেখে রুশা দাঁড়িয়ে আছে।
Jimin :কি কি বলছিস এগুলা!(ঘাবড়ে গিয়ে)
রুশাঃতুই ভুলে গেছিস ভাইয়া যে আমি তোর বোন।
দাদুভাইঃএতই যখন ভালোবাসিস তাহলে সব কিছু বলে দে।
Jimin :আমি ওকে ভালোবাসি না।
রুশাঃমিথ্যা বলিস না ভাইয়া।এমন না হয়ে যায় যে তুই ওকে বলার আগেই ও অন্যকারোর হয়ে গেলো।
Jimin :সেটা কখনই হবে না।কিন্তু ও একটা মানুষ?
দাদুভাইঃতো কি হয়েছে?তোর মাও তো মানুষ
Jimin :কিন্তু ওর যদি কোনো ক্ষতি হয়।
দাদুভাইঃওর কোন ক্ষতি হবে না।ওরা তিন ভাইবোনই একধরনের ক্ষমতা আছে।যেটা ওরা নিজেরাই জানে না হয়তোবা জানে।
আদি বইয়ে বলা আছে যে ওই মেয়েই তোমার যোগ্য জীবনসাথি।ওই মেয়ে মানুষ হলেও তাদের তিনজনের মধ্যেই এক অদ্ভুত শক্তি আছে।
রুশাঃতাহলে তো সব হয়েই গেলো।
Jimin :না। ও যদি জানে যে আমি বা আমরা মানুষ না তাহলে ও এটা মানতে পারবে না।তাই ও Jimin কে না রাতের লোকটাকে ভালোবাসবে।
রুশাঃকিন্তু জানিস আমার মনে হয় Y/N এর বড়ভাইয়া মেহেককে কিছুটা পছন্দ করে।
Jimin :ওটা আমারও মনে হয়েছে।তার সাথে Y/N এর বড়ভাইয়াকে আমার কাছে অনেক অদ্ভুত লেগেছে।
দাদুভাইঃসব রহস্য আস্তে আস্তে খুল।
তার আগে এসব কিছু নিহাল আর কথাকে বলতে হবে।আমি ওদেরকে সব বুঝিয়ে বলবো।
রুশাঃহুম দাদুভাই।
Jimin :চলো অনেক রাত হয়েছে সবাই ঘুমাতে যাও।আমাকে একটু পর যেতে হবে।
রুশাঃযাচ্ছি যাচ্ছি।
রুশা আর দাদুভাই চলে গেলো।
Jimin :তুমি আমাকে না তোমার লোকটাকেই ভালোবাসবে।তাহলে তুমি আর কখনও আমাকে ছেড়ে যাবে না।তোমার সেই লোকটা যে আমি সেটা জানার পরও তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না।আর যদি যাওআর কথাও তুমি ভাবো তাহলে...........
আর কিছু না বলে jimin একটা ডেবিল হাসি দিল।
অন্যদিকে
বড়ভাইয়াঃযেই আমি কোন মেয়ের দিকে তাকাই না কোন মেয়েকে কোনদিন পাত্তা দেই নাই সেই আমি কিনা একটা পিচ্ছি পাগলির প্রেমে পরলাম। (হালকা হেসে)
আমিঃতা সেই পিচ্ছি পাগলিটা কি মেহেক রানি।
বড়ভাইয়াঃহুম।(আনমনেই)
ছোটভাইয়াঃও আচ্ছা।
বড়ভাইয়াঃতোরা এখানে?(ঘাবড়ে গিয়ে)
ছোটভাইয়াঃনা মানে আমার ভাইও আজকাল কোন মেয়ের কথা ভাবে!!!
বড়ভাইয়া কিছু না বলে হালকা হাসলো।
আমিঃতা ভাইয়া আমি কি মেহেককে বলবো।
বড়ভাইয়াঃএকদমি না।
আমিঃকিন্তু যদি অন্য কেউ ওকে নিয়ে চলে যায় তখন!
বড়ভাইয়াঃআমাকে কি তোদের বাচ্চা মনে হয়? Kim Namjoon জানে কি ভাবে তার জিনিস আদায় করতে হয়।
আমি আর ছোটভাইয়া বসে বসে ভাইয়ার কথাগুলা শুনতেছি।
বড়ভাইয়াঃসোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাকাতে হবে।
আমিঃবুঝলাম।
বড়ভাইয়াঃকি বুঝলি?
ছোটভাইয়াঃএই যে আমাদের মেহেকের কপালে একটা দাজ্জাল বর আছে।
এই বলে আমি আর ছোটভাইয়া হাসতে লাগলাম।
বড়ভাইয়াঃতবে রে।
ভাইয়া আমাদের দিকে তেরে আসতেই আমরা দুইজনেই এক দৌড় দিলাম।
বড়ভাইয়া আমাদের কান্ড দেখে হাসতে লাগলো।